সিরিয়ার খান শেইখুন শহরে রাসায়নিক হামলার তদন্ত নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাল্টাপাল্টি প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে রাশিয়া ও আমেরিকা। দু দেশই তদন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বললেও তার ধরণ থাকবে ভিন্ন।
২০১৫ সালে জয়েন্ট ইনভেস্টিগেটিভ ম্যাকানিজম বা জিম নামে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থা যৌথভাবে এ তদন্ত পরিচালনা করে। তবে খান শেইখুন শহরে রাসায়নিক হামলার সম্পর্কে সম্প্রতি জিম কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে তাকে ত্রুটিপূর্ণ ও পক্ষাপতামূলক বলে রাশিয়া ও সিরিয়া প্রত্যাখ্যান করেছে। মস্কো বলছে, রাসায়নিক হামলা সম্পর্কিত তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করার কৌশলে জিম কমিশনের ত্রুটি ছিল।
রাশিয়া বলছে, সিরিয়ায় আরো তদন্তের জন্য কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা সেজন্য আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। রাশিয়া ও আমেরিকা জিম কমিশনের তদন্তের বিষয়ে যে খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে তাতে রাশিয়া ছয় মাসের জন্য এ কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলেছে। অন্যদিকে আমেরিকা চাইছে দু বছরের জন্য এ কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হোক। মস্কো বলছে, জিম কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করে নতুনভাবে ঘটনার তদন্ত করতে হবে। এজন্য তদন্তকারীদেরকে খান শেইখুন শহরে যেতে হবে। এছাড়া, গত এপ্রিলে হোমস প্রদেশের শেইরাত বিমানঘাঁটিতে মার্কিন বাহিনী সিরিয়ার সেনাদের ওপর যে ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়েছিল তাও তদন্ত করতে হবে।
গত ১৪ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদে আনা মার্কিন সমর্থিত একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। ওই প্রস্তাবে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা সম্পর্কে আরো তদন্তের জন্য কমিশনের মেয়াদ বাড়োনোর প্রস্তাব করা হয়। ভোটোর দু দিন পর জিম কমিশন রিপোর্ট প্রকাশ করে এবং রাসায়নিক হামলার জন্য সিরিয়ার সরকারকে দায়ী করে। খান শেইখুন শহরের হামলায় অন্তত ৯০ জন মারা গিয়েছিল।
এ রিপোর্ট সম্পর্কে বৃহস্পতিবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিরস্ত্রীকরণ বিভাগের প্রধান মিখাইল উলিয়ানভ বলেছেন, ঘটনাস্থলে না গিয়েই জিম কমিশন তার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, “কল্পনা করুন তো- অপরাধ তদন্তে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন না করেই অপরাধীর বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট দিচ্ছেন। এ ধরনের রিপোর্ট তো আদালত গ্রহণ করে না। অথচ তারা এ ধরনের জিনিসকে নিরাপত্তা পরিষদের মতো জায়গায় গ্রহণযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করছে।”
সিরিয়া সরকার তার ভাণ্ডারে থাকা সমস্ত রাসায়নিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক নজরদারিতে ধ্বংস করার পরও দেশটির সরকারকে দায়ী করে জিম কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে।
**রাজনৈতিক, ধর্মবিদ্বেষী ও খারাপ কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।**