আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপ-নির্বাচনে জয়ী হতে পারবে, এমন প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিবে ।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডিএনসিসি নির্বাচন নিয়ে সরকারের কোনো তোড়জোড় নেই। নিয়ম অনুযায়ী, ওই পদটি শূণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগ কোনো ইন্টারফেয়ার করেনি। এটা আওয়ামী লীগের বিষয়ও না। নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনুযায়ী নির্বাচন হবে। তবে এই নির্বাচনে জেতার জন্য আওয়ামী লীগ ‘উইনেবল’ ক্যান্ডিডেট দেবে।
কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) কখন যে কী বলে তার ঠিক নেই। একবার বলে যেকোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাবে। আবার বলে খালেদা জিয়ার সাজা হলে যাবে না। কোনটা সঠিক?
তিনি বলেন, বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার সাজা তো সরকার বা আওয়ামী লীগ দেবে না। এটা আদালতের ব্যাপার। আর নিম্ন আদালতে সাজা হলে তো উচ্চ আদালত আছে। আপিল করার সুযোগ আছে, রিভিউও করতে পারবে।
কাদের বলেন, নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। বিএনপির চায়, আমরাও চাই। আমি অনেকবার বলেছি, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন আমরা চাই। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন চাই না। যেটা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি হয়েছে।
বিকল্প ধারা বাংলাদেশ চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে চার দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন জোট যুক্তফ্রন্টকে স্বাগত জানিয়ে কাদের বলেন, নতুন এই জোটকে স্বাগত জানাই। এতে দেশের গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বাড়বে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন অনেক মরুকরণ হবে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করা আবার রোহিঙ্গাদের ভাষাণচরে পুর্নবাসনের ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘প্রত্যাবাসন একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। উখিয়া-টেকনাফের জনসংখ্যা সাড়ে চার লাখ। এখন সেখানে রোহিঙ্গা এসেছে সাড়ে ১০ লাখ। এতে আমাদের সাড়ে চার লাখ জনগণ উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত। আমাদের প্রকৃতি হুমকির মুখে। তাদেরকে সেখানে তাবুতে রাখা হচ্ছে। দীর্ঘদিন তা কিভাবে রাখা হবে? ওখানের মানুষ ধৈর্যহারা হচ্ছে। তাদের টলারেবল লেভেল অতিক্রম করছে।’
‘আমার গতকালের সফর ছিল সেখানকার জনগণকে সান্তনা দেয়া, তাদের আশ্বস্ত করা যে আমরা প্রত্যাবাসনের (রোহিঙ্গা) ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিতও হতে পারে। তাই এত লোকদের যদি আমরা স্থান্তারিত না করি, তাহলে আমাদের পর্যটন শিল্পও হুমকির মুখে পড়বে। সেখানের স্থানীয় অর্থনীতি প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়বে।’
এর আগে ওবায়দুল কাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এছাড়াও জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, একেএম এনামুল হক শামীম, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন ও রিয়াজুল কবির কাওছার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
**রাজনৈতিক, ধর্মবিদ্বেষী ও খারাপ কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।**