নিখোঁজ হওয়ার দেড় মাস পর অবশেষে বাড়ি ফিরলেন বাংলাদেশের নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ড. মুবাশ্বার হাসান সিজার। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ১টার দিকে এক মাস ১৪ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রীর বাসায় ফিরে আসেন তিনি।
শুক্রবার মুবাশ্বার হাসানের বোন তামান্না তাসমিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন- ‘আল্লাহতাআলার অশেষ রহমতে গতকাল (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ১টায় আমার ভাইয়া সুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরেছে।’ পরে সিজারের বাবা মোতাহের হোসেনও বলেছেন, রাতে কে বা কারা সিজারকে বিমানবন্দর এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পরে সেখান থেকে সিএনজি করে সে বাড়ি ফিরে আসে।
শুক্রবার ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রীতে নিজ বাসার সামনে মোবাশ্বার হাসান সংবাদকর্মীদের জানান, গতকাল রাতে চোখ বেঁধে একটা গাড়িতে তুলে বিমানবন্দর সড়কের কোনো এক জায়গায় অপহরণকারীরা তাঁকে নামিয়ে দেয়। বলে, ‘তুই চলে যা পেছনে তাকালে মেরে ফেলব।’ পরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ডেকে বাসায় ফেরেন।
মোবাশ্বারের ভাষ্য, অপহরণকারীদের বিভিন্ন সময় তিনি টাকা–পয়সা নিয়ে কথা বলতে শুনেছেন। তাঁর সঙ্গে থাকা ২৭ হাজার টাকাও অপহরণকারীরা নিয়ে নেয়। কিছুদিন ধরে নিজেদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলছিল অপহরণকারীদের মধ্যে। মনে হতো অপহরণকারীদের কেউ ‘মিসিং’ হয়েছে। অপহরণকারীরা মোবাশ্বারের বন্ধুবান্ধবের মধ্যে বড় কেউ (উচ্চপর্যায়ের) আছে কি না জানতে চাইত।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে দুই মাস ১০ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর ফিরে আসেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের প্রতিবেদক উৎপল দাস।
গত ৮ নভেম্বর সকাল ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হন সিজার। পরে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস নেন তিনি। বিকেল থেকে তাঁর মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এর পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ বিষয়ে রাতেই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সিজারের বাবা মোতাহের হোসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি নেন সিজার। দেশে ফিরে তিনি অধ্যাপনা ও গবেষণার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে সিজার ঢাকার বেসরকারি ইউল্যাব ইউনিভার্সিটিতে মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করেন। প্রায় দুই বছর সেখানে কাজ করার পর তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।
**রাজনৈতিক, ধর্মবিদ্বেষী ও খারাপ কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।**