ভারতের রাজস্থানের বিজেপি বিধায়ক জ্ঞানদেব আহুজা এক হুমকি দিয়ে বলেছেন, “গরু পাচার ও গরু জবাইয়ের সঙ্গে যারা যুক্ত থাকবে, তাদের মরতে হবে।” একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি কীভাবে এরকম মন্তব্য করলেন তা নিয়ে বিভিন্নমহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জ্ঞানদেব আহুজা’র প্রশ্ন, “আমাদের দেশে গরুকে পুজো করা হয়, সেখানে গরু জবাই করা হবে কেন? গোমাতাকে মানুষ ভালোবাসে। গরু ‘মা’ এবং এটা মাতৃশক্তির দেশ।”
আহুজা’র দাবি, “অন্যান্য এলাকার গরু পাচারকারীরা আলোয়ার হয়ে যাতায়াত করে। গ্রামবাসীরা যখন তাদের আটকাতে যায়, পাচারকারীরা পাল্টা গুলি চালায়। কিন্তু, তারা এখানে আসে কেন? মার খেতে, আর মরতে?”
গত শনিবার বিজেপিশাসিত রাজস্থানের আলোয়ার জেলার রামগড় গ্রামে জাকির খান নামে এক ব্যক্তিকে গরু পাচারের অভিযোগে বেধড়ক মারধর করে সেখানকার উত্তেজিত জনতা। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ পরে তাকে গ্রেপ্তার করে।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল (রোববার) বিজেপি বিধায়ক জ্ঞানদেব আহুজা গরু পাচার ও গরু জবাইয়ের যুক্ত ব্যক্তিদের মরতে হবে বলে হুমকি দিয়েছেন।
বিজেপি আগে নিজেদের ঘর সামলাক: ড. ইনামুল
এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক ও কোলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের সাবেক অধ্যাপক ড. ইনামুল হক রেডিও তেহরানকে বলেন, “ভারতে যারা গবাদিপশুর গোশত রফতানি করে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছয়টি রফতানিকারক সংস্থার মালিক আরএসএসের লোক। এদের মধ্যে একজন উত্তর প্রদেশের বিজেপি নেতা সঙ্গীত সোম। সেজন্য বিজেপি আগে নিজেদের ঘর সামলাক, তারপর অন্যদের নিয়ে কথা বলবে। এজন্য যদি কাউকে শাস্তি দিতে হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হয়, কারণ তার আমলেই গবাদি পশুর গোশত রফতানিতে ভারত প্রথম হয়েছে। এজন্য তিনিই দায়ী।”
অধ্যাপক ড. ইনামুল হক বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশের গোশালায় যথাক্রমে ৭৫০, ৫০০ ও ১১০০ গরু মারা যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, “ওরা গোয়ার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পাররিকার শাস্তি দিক, কেননা তিনি কর্ণাটক থেকে গরুর গোশত নিয়ে আসছেন গোয়াবাসীদের খাওয়ার জন্য।”
তিনি বলেন, “ওরা মানুষকে গরু ভাবছে। দেশে এত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারত্ব, দুর্নীতি নিয়ে ওদের কোনো কথা নেই কিন্তু গরু নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।”
**রাজনৈতিক, ধর্মবিদ্বেষী ও খারাপ কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।**