মৌসুম জুড়ে ধুঁকছে রিয়াল মাদ্রিদ! লা লিগায় ১৯ পয়েন্ট পিছিয়ে। শিরোপা দৌড়ে ওঠাও আর সম্ভব নয় রিয়াল মাদ্রিদের। কোপা দেল রে থেকে বিদায় নিয়েছে লেগানেসের মত দুর্বল দলের কাছে হেরে। রিয়াল মাদ্রিদ স্মরণাতীতকালে এত বড় বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে গেছে কি না সন্দেহ। তবুও এই রিয়াল মাদ্রিদকে অবহেলা না করার পরামর্শ দিয়েছেন দলটির সাবেক এবং বর্তমান বায়ার্ন মিউনিখ কোচ ইউয়ুপ হেইঙ্কেস।
হেইঙ্কেসের মতে, রিয়ালকে কখনোই গনার বাইরে রাখা যায় না। তাদের অবশ্যই গুনতে হবে। দলটি সম্পর্কে তিনি ভালোভাবেই জানেন। এই দলটির নাড়ি-নক্ষত্র তার জানা। হেইঙ্কেস যখন রিয়ালের কোচ ছিলেন, তখন তার অধীনেই চ্যাম্পিয়নস লিগের সেপ্টিমা (সপ্তম শিরোপা) জিতেছেল লস ব্ল্যাঙ্কোজরা। প্রায় একই অবস্থায় থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছিলেন হেইঙ্কেস। তবে বর্তমান অবস্থা একেবারেই ভিণ্ন। এমনও হতে আগামী চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালকে নাও দেখা যেতে পারে।
বায়ার্ন মিউনিখের বর্তমান কোচ গোল ডটকমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ৯৯৮ সালে যখন আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিলাম, সেবার লা লিগায় হয়েছিলাম চতুর্থ। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলতে পারি, কখনোই রিয়াল মাদ্রিদকে অবজ্ঞা কিংবা অবমূল্যায়ণ করবেন না। কারণ, ইউরোপের অন্যতম সেরা দলটি রয়েছে তাদের হাতে।
কোচ জিদানের ওপরও চাপ বেড়ে গেছে। ইউরোপিয়ান সাফল্য তাদের একমাত্র সুযোগ মৌসুমটি স্মরণীয় করে রাখার। লক্ষ্য পূরণ হলেই হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের ইতিহাস গড়বে মাদ্রিদের পরাশক্তিরা।
এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডেই নেইমারের দল পিএসজির মুখোমুখি হতে হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদকে। যে ম্যাচটি নিয়ে ইতোমধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ফুটবল বিশ্বে। একদিনে নিজেদের বাঁচার শেষ অবলম্বন হিসেবে রিয়ালে সামনে বাকি আছে শুধু চ্যাম্পিয়নস লিগ, অন্যদিকে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ইউরোপের অন্যতম সেরা দল বানিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের আশায় ফুটতে থাকা পিএসজি।
হেইঙ্কেসের ভবিষ্যদ্বাণী, রিয়ালই সামনে এগিয়ে যাবে। বিদায় করে দেবে পিএসজিকে। তিনি বলেন, আপনি কখনোই চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে রিয়ালকে বাইরে ধরতে পারেন না। পিএসজির চেয়ে অনেক অনেক বেশি এগিয়ে এবং অভিজ্ঞ তারা। আমার বিশ্বাস, এই দু’দলের মুখোমুখিতে জিতবে রিয়ালই।
হেইঙ্কেসকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাহলে কেনো গ্যালাকটিকোরা এবার এতটা ভুগছে। কেনো শক্তিশালী দল থাকা সত্ত্বেও এত বাজে পারফরম্যান্স করছে? হেইঙ্কেসের উত্তর, এর মূল কারণ, দলবদলে তারা নিজেদের দলটাকে গুছিয়ে নিতে পারেনি। তিনজন দারুণ খেলোয়াড়কে ছেড়ে দিয়েছে। আলভারো মোরাতা, পেপে এবং হামেশ রদ্রিগেজ। সম্ভবত পারিশ্রমিক কমিয়ে আনার লক্ষ্যেই এই তিন খেলোয়াড়কে ছেড়ে দিয়েছে তারা।
হেইঙ্কেস বলেন, তারা হয়তো দলবদলের বাজারে খুব বেশি ব্যয় করেনি। নতুন নতুন তারাকাদেরও নিতে চায়নি দলে। কিন্তু দলটাকে ঠিক রাখতে হলে পুরনোদের সঙ্গে নতুন তারকাদেরও মেলবন্ধন ঘটাতে হবে। তাহলেই ভালো করবে দল।
গ্রুপ পর্বে একই গ্রুপে (‘বি’) ছিল পিএসজি ও বায়ার্ন। মুখোমুখি লড়াইয়ে দু’দলই জয় তুলে নেয়। প্যারিসে ৩-০ গোলের লজ্জার পর অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় (৩-১) মধুর প্রতিশোধই নেয় বাভারিয়ানরা। পাঁচ জয় ও ১ হারে সমান ১৫ পয়েন্ট হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে থেকে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে পিএসজি।
শেষ ষোলোতে প্রথমে পিএসজিকে আতিথ্য দেবে রিয়াল। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আগামী বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বহুল প্রতিক্ষীত হাইভোল্টেজ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত পৌনে ২টায়। প্যারিসে একই সময়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নির্ধারণী ফিরতি পর্বের ম্যাচ ৬ মার্চ। বায়ার্নের প্রতিপক্ষ বেসিকতাস।
**রাজনৈতিক, ধর্মবিদ্বেষী ও খারাপ কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।**