রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার সামনে দুটি খুঁটিতে বাঁধা একটি ষাঁড়, একটি গাভী ও আরেকটি বাছুর। মাঝে মাঝেই অসহায়ভাবে হাম্বা হাম্বা ডেকে যাচ্ছে তারা। তাদের ডাকে কৌতুহলী কেউ কেউ ক্ষণিকের জন্য ফিরে তাকালেও, পরক্ষণেই চলে যাচ্ছেন যে যার কাজে। আসলে গত ২০ দিন ধরে বিনা দোষেই থানায় আটকে রাখা হয়েছে গরুগুলোকে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৭ এপ্রিল চোরের হাত থেকে গরুগুলোকে উদ্ধার করার পর থেকে মলিক খুঁজে না পাওয়ায় এগুলোকে থানাতেই রাখা হয়েছে। গ্রেফতারের পর দুই চোরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। যদিও পেটপুরে খেতে না পেয়ে দিনে দিনে শুকিয়ে যাচ্ছে গরুগুলো।
বোয়ালিয়া থানা পুলিশ জানায়, গ্রেফতার দুই চোর গরুগুলোর কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। গরুগুলোর মালিক কে সে ব্যাপারেও মুখ খোলেনি। পরে তাদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে মামলা করেন থানার এসআই গোলাম মোস্তফা। ওই মামলায় এখন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার সামনে খোলা আকাশের নিচে ওই গাভি, ষাঁড় ও একটি বাছুরকে বেঁধে রাখা হয়েছে। একটি পাত্রে গরুগুলোর সামনে পানি দেয়া। নেই কোনো খড়। খাবারের জন্য একটু পরপরই গরুগুলো ‘হাম্বা’ ‘হাম্বা’ ডেকে যাচ্ছিল।
পুলিশের কয়েকজন সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, সবসময় গরুগুলো এক জায়গাতেই বাঁধা। মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে ঝড়-বৃষ্টি। অভুক্ত গরুগুলো সারাক্ষণ চিৎকার করেই চলছে। দেখাশোনার নেই কেউ। এ যেনো গরুগুলোর হাজতবাস।
এ নিয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি আমান উল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগরীর উপশহর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, মালিক না পাওয়ায় গরুগুলো থানা হেফাজতেই রয়েছে। নিজের পকেটের পয়সায় সাধ্যমতো গরুগুলোর খাবার দিচ্ছি। তবে গরুগুলোর যে যথেষ্ট যত্ন নেয়া হচ্ছে না সেটিও টের পাচ্ছি।
**রাজনৈতিক, ধর্মবিদ্বেষী ও খারাপ কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।**