গত ১১ মে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট মহাশূন্যে উৎক্ষেপণের দৃশ্য কাছে থেকে দেখতে সরকারি খরচে ওয়াশিংটন যান ময়মনসিংহ-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদ। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি এক ভয়াবহ কাণ্ড ঘটিয়েছেন। সেটা রীতিমত অগ্নিকাণ্ড। নন-স্মোকিং হোটেলে ধূমপান করে পুড়িয়ে দিয়েছেন দামি কার্পেট।
বাংলাদেশ দূতাবাসের নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে প্রতি রাত ২৫৯ ডলার হারে ৯ মে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ককোয়া বিচ সিটির কোর্টিয়ার্ড বাই ম্যারিয়ট হোটেলের ৭২০ নম্বর স্যুইট ভাড়া করা হয়। সেখানেই গত ১০ মে রাত ১০টায় হোটেল কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
হোটেলের ডিউটি ম্যানেজার ক্রিস স্মিথ জানান, ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে ৯ মে ওই স্যুইট ভাড়া করা হয়। আর কক্ষটি হচ্ছে নন-স্মোকিং। যেখানে ধূমপান একেবারেই নিষিদ্ধ। কিন্তু সেটা জানানোর পরও ওই কক্ষের গেস্ট শরীফ আহমেদ ধূমপান করেন। এরপর তার আগুন ধরা সিগারেট প্লাস্টিক ট্র্যাশে নিক্ষেপ করেন। সেই ট্র্যাশ পুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কক্ষের কার্পেটে। গন্ধ পেয়ে হাউজকিপার হন্যে হয়ে খোঁজ করেন কোন কক্ষ থেকে গন্ধ আসছে।
তাড়াতাড়ি বিষয়টি শনাক্ত করতে পারায় বড় ধরনের দুঘর্টনা থেকে পুরো হোটেল রক্ষা পেয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাসহ দূতাবাসকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান হোটেল ম্যানেজার। আর কার্পেট পুড়ে ফেলাসহ অন্যান্য ক্ষতির জন্য মোট ৪৫০ ডলার জরিমানা করা হয়েছে। এ অর্থ আদায় করা হবে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ কোনো মন্তব্য না করে কেবল বলেন, এমন পরিস্থিতি সত্যি বিব্রতকর ও লজ্জাজনক।
এমপি শরীফের এই ধরনের কার্যক্রমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানও। তিনি বলেছেন, মহাশূন্য বিজয়ের গৌরবময় অধ্যায়ে এমন কাণ্ড খুবই দুঃখজনক। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য হয়ে দূতাবাসের নামে নেওয়া কক্ষে এমন কাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না।
এ ব্যাপারে এমপি শরীফ বলেন, আমার বিরুদ্ধে এটি একটি সাজানো অভিযোগ। কোথায় ধূমপান করা যাবে আর কোথায় যাবে না, সেটি একজন সংসদ সদস্য কি বুঝেন না? যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা কাল্পনিক। আমি নিজেও জরিমানার বিষয়ে দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে।
এর আগে পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থীকে জেতানোর ব্যবস্থা না করায় রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নানা ধরনের হুমকি দেওয়ায় প্রধামন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে তার বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাছাড়া নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে সদর উপজেলা প্রকৌশলীকে পেটানোর অভিযোগও রয়েছে ফুলপুর-তারাকান্দার এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।
**রাজনৈতিক, ধর্মবিদ্বেষী ও খারাপ কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।**