চর্মরোগের সমস্যা নিয়ে আজ থেকে মাস সাতেক আগে ভোলার যমুনা মেডিকেল সার্ভিসেসে ডাক্তার রিয়াদ সিদ্দিকীর কাছে যায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী (১৭)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের এই চিকিৎসক প্রতি শুক্রবার সেখানেই রোগী দেখতেন।
রিয়াদ প্রথম সাক্ষাতের সময় ওই কিশোরীকে বিবস্ত্র করে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে মলম লাগিয়ে দেন। এ বিষয়ে কিশোরী প্রতিবাদ করলে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘আমি তোমার ডাক্তার। আমার কাজ এগুলো করা, আমি এগুলো করব।’ এ বলে তিনি ছাত্রীর সব স্পর্শকাতর স্থানেই হাত দেন এবং কাউকে কিছু বলতে বারণ করেন। এরপর লজ্জায় কাউকে কিছুই বলেনি কিশোরীটি।
পুনরায় চিকিৎসার জন্য গত ২৯ ডিসেম্বর ওই ছাত্রী ডাক্তার রিয়াদের কাছে যায়। ওইদিনও তাকে জোড় করে বিবস্ত্র করেন এবং একপর্যায়ে যৌন কাজে লিপ্ত হন। ওই ছাত্রী তখন চিৎকার করলে ওড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে ফেলেন রিয়াদ। ছাত্রীকে বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ছাত্রীর কিছু গোপনীয় ছবি তুলেন ডাক্তার রিয়াদ এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। সেই সঙ্গে নিয়মিত তার কাছে আসতে বলেন।
এখানেই শেষ নয়, মেয়েটির বাবা-মাকে ফোন করে রিয়াদ বলেন, ‘আপনার মেয়ের মরণব্যাধি রোগ হয়েছে। তাকে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা নিতে হবে।’ এমনকি ছাত্রীটিকে বিয়ে করারও প্রস্তাব দেন রিয়াদ সিদ্দিকী।
তাতেও কাজ না হওয়ায় গত ৩০ ডিসেম্বর ওই ছাত্রীর মা-বাবাকে ফোন দিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘আপনার মেয়ের চিকিৎসার জন্য বোর্ড বসানো হবে।’ পরের দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর সকালে মেয়েকে নিয়ে মা-বাবা বিএসএমএমইউ হাসপাতালে আসেন। এরপর রিয়াদকে ফোন দিলে সকাল ১০টায় হাসপাতালের বটগাছের সামনে এসে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। বোর্ড বসিয়ে ডাক্তার দেখানো হবে বলে তাদের ক্যান্টিনে অপেক্ষা করতে বলেন। আর কিশোরীটিকে সঙ্গে করে হাসপাতালের বি ব্লকে এক নির্জন স্থানে নিয়ে যান এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ওই ছাত্রী তখন কান্নাকাটি শুরু করে এবং একপর্যায়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি পরে তার বাবা-মাকে গিয়ে জানায়।
পরে এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমনের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় (জিআর) মামলার এজাহার আসে।
তবে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য চিকিৎসক রিয়াদ সিদ্দিকীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
**রাজনৈতিক, ধর্মবিদ্বেষী ও খারাপ কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।**